Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১৭ এপ্রিল ২০২৩

কাওসার আহমেদ, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

কাওসার আহ্‌মেদ ৮ ডিসেম্বর ২০২২ তারিখে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অবৈতনিক সদস্য হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন।

 

কাওসার আহ্‌মেদ ১৯৮১ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ হতে মেধাতালিকায় ৪র্থ স্থান অধিকার করে উত্তীর্ণ হন। ১৯৯৮ সালে তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ হতে মেধাতালিকায় ১৫তম স্থান অধিকার করেন। অতঃপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগ হতে এলএলবি (অনার্স) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অর্জন করেন। শিক্ষাজীবনে কৃতিত্বপূর্ণ ফলের জন্য তাঁকে জাস্টিস আব্দুল্লাহ স্বর্ণপদক, অ্যাটর্নি আলমগীর স্বর্ণপদক ও প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদকে ভূষিত করা হয়। ২০০৬ সালে কাওসার আহ্‌মেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত সুবিখ্যাত নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় হতে আন্তর্জাতিক আইনে স্নাতকোত্তর তথা এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। পুনরায় ২০১৯ সালে তিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভাস্থিত দ্য গ্র্যাজুয়েট ইন্সটিটিউট ও জেনেভা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক যৌথভাবে প্রদানকৃত আন্তর্জাতিক বিরোধ নিষ্পত্তির ওপরে দ্বিতীয় এলএলএম ডিগ্রি অর্জন করেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (ইতালি), ম্যাক্স প্লাঙ্ক ইনস্টিটিউট (জার্মানি), দ্য হেগ অ্যাকাডেমি (নেদারল্যান্ডস) প্রভৃতি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক আইনবিষয়ক প্রশিক্ষণ ও গবেষণার অভিজ্ঞতা লাভ করেন।     

 

কাওসার আহ্‌মেদ ২০০৫ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক আইনজীবী হিসেবে সনদপ্রাপ্ত হন। অতঃপর তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। তিনি প্রধানত সাংবিধানিক আইন, ব্যবসায়, অর্থঋণ, দেওয়ানি, ফৌজদারি, কোম্পানি, সালিস, আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার ইত্যাদি বিষয়ে পেশাগতভাবে আইন চর্চা করে থাকেন। প্রথাগত আইনপেশার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের আইনবিষয়ক পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে পাঠদান করেছেন। আইনপেশা, শিক্ষকতা ও গবেষণা - সকল ক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর স্বচ্ছন্দ পদচারণা।  

 

কাওসার আহ্‌মেদ বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে কর্মরত থাকার পাশাপাশি মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের মানবাধিকারবিষয়ক পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন; যথা, বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, ইউনাইটেড নেশনস ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনডিপি), ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ল’ অর্গানাইজেশন (আইডিএলও), আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম), সেভ দ্য চিলড্রেন প্রভৃতি।

 

কাওসার আহ্‌মেদ বাংলাদেশ পররাষ্ট মন্ত্রণালয় কর্তৃক নিযুক্ত হয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইউনিভার্সাল পিরিওডিক রিভিউ (ইউপিআর)-এর জন্য বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। ইউপিআর  হলো জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার নিমিত্তে প্রবর্তিত সর্বজনীন প্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ইউপিআর প্রতিবেদনদ্বয় জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে যথাক্রমে ২০১৩ সালে ১৬তম অধিবেশনে ও ২০১৮ সালে ৩০তম অধিবেশনে উপস্থাপন করা হয়। এতদ্ভিন্ন কাওসার আহ্‌মেদ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক দুইটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিল যথা নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সনদ (আইসিসিপিআর) ১৯৬৬ ও অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সনদ (আইসিইএসসিআর) ১৯৬৬-এর ওপর বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। প্রথমোক্ত প্রতিবেদনটি হিউম্যান রাইটস কমিটি কর্তৃক ২০১৭ সালের মার্চ মাসে পর্যালোচিত হয়। আইসিইএসসিআর এর ওপর প্রদত্ত রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারবিষয়ক কমিটি কর্তৃক ২০১৮ সালে পর্যালোচিত হয়। অধিকন্তু তিনি বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ২০১৯ সালে নিষ্ঠুরতা এবং অন্যান্য নির্দয়, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি সম্পর্কিত সনদ ১৯৮৪ এর ওপর প্রথম রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন, যা জাতিসংঘের কমিটি এগেইনস্ট টর্চারে পেশ করা হয়। কাওসার আহ্‌মেদ রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে উপরিউক্ত প্রতিবেদনসমূহ উপস্থাপনে সহায়তা করেন। 

 

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরামর্শক হিসেবে কাওসার আহ্‌মেদ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ ড. লিয়াল সুঙ্গা যৌথভাবে বাংলাদেশে নিষ্ঠুরতা এবং অন্যান্য নির্দয়, অমানবিক বা অবমাননাকর আচরণ বা শাস্তি সম্পর্কিত কনভেনশন ১৯৮৪ এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত একটি ছায়া প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিবেদনটি পুস্তিকা আকারে ২০১৫ সালে প্রকাশ করে। এছাড়াও তাঁরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের অনুরোধক্রমে যৌথভাবে “এ ক্রিটিক্যাল অ্যাপরেইজাল অব লজ রিলেটিং টু সেক্সুয়াল অফেন্সেস ইন বাংলাদেশ” নামক একটি গবেষণা সম্পন্ন করেন, যা পরবর্তীসময়ে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়। কাওসার আহ্‌মেদ ও ড. লিয়াল সুঙ্গা যৌথভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জন্য জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদের অধীনে গঠিত শিশু অধিকার-বিষয়ক কমিটিতে পেশ করার জন্য একটি ছায়া প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন। এছাড়াও তিনি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জন্য আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা সম্পন্ন করেন।

 

এতদ্ব্যতীত, কাওসার আহ্‌মেদ বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন এর পক্ষে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)–এর কমিটি অন ফ্রিডম অব অ্যাসোসিয়েশনে অভিযোগ নং- ২৭৬৫ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগটি ২০১৬ সালে বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়ন এর পক্ষে নিষ্পত্তি হয়। 

 

সংবিধান, আইনের শাসন, আন্তর্জাতিক আইন এবং মানবাধিকার বিষয়ে লেখা কাওসার আহ্‌মেদের গবেষণাপত্র, প্রবন্ধ, কলাম ও ইন্টারভিউ বিভিন্ন জাতীয়, আন্তর্জাতিক জার্নাল, ব্লগ ও জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি তাঁর সম্পাদনা করা ‘বাংলাদেশ গণপরিষদ কার্যবিবরণী’ দুই খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে।

কাওসার আহ্‌মেদের নির্বাচিত প্রকাশনা, গবেষণা ও সাক্ষাৎকারসমূহ