আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কার্যালয়ে দ্যা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইন্সটিটিউট (আইআরআই) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইন্সটিটিউট (এনডিআই) এর প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করতে আসেন। এ সময় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষে মাননীয় চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, মাননীয় সার্বক্ষণিক সদস্য জনাব মোঃ সেলিম রেজা, অবৈতনিক সদস্য জনাব আমিনুল ইসলাম, সচিব (ভারপ্রাপ্ত) জনাব কাজী আরফান আশিক উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলের পক্ষে দুজন বিশ্লেষক জনাব ক্রিস্পিন কাহেরু এবং জনাব মারিয়াম তাবাতাদজে উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠককালে নির্বাচনকালীন মানবাধিকার সুরক্ষা, সহিংসতামুক্ত নির্বাচন, সংখ্যালঘু ও অনগ্রসর জাতিগোষ্ঠীর নিরাপত্তা, নারী ও শিশু অধিকার নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলাবাহিনী এবং গণমাধ্যমকর্মীদের ভূমিকা ইত্যাদি বিষয় আলোচনায় স্থান পায়। পাশাপাশি নির্বাচন সংক্রান্ত আইন, বিধিমালা ও পদক্ষেপ ইত্যাদি বিষয় গুরুত্ব সহকারে আলোচনায় স্থান পায়।
বৈঠককালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পক্ষ থেকে নির্বাচনপূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী মানবাধিকার সুরক্ষার জন্য সুবিবেচনাপ্রসূত ও গবেষণানির্ভর নির্দেশিকা প্রণয়ন করেছি। এটি একটি সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যনির্ভর ডকুমেন্ট এবং সবার জন্য উম্মুক্ত। সহিংসতামুক্ত জাতীয় নির্বাচন আমাদের প্রত্যাশা। এজন্য নির্বাচনকালীন ঘটনাপ্রবাহ জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। নির্দেশিকাটি কমিশনের ওয়েবসাইটে আছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে যাতে দেশের সর্বস্তরের জনগণ সুষ্ঠূভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এবং সংখ্যালঘুরা যাতে পরিপূর্ণ নিরাপত্তা পায় সেক্ষেত্রে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অত্যন্ত সোচ্চার। রাজনৈতিক দলগুলো স্বাধীনভাবে মতামত প্রকাশ করবে, আলোচনা-সমালোচনা ও বিধি মোতাবেক নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনা করবে এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে দেশের প্রত্যেক নাগরিক কিংবা দলের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার যেমন অধিকার আছে প্রত্যেক নাগরিকেরও তেমন নিজ নিজ পছন্দমত ভোটাধিকার প্রয়োগের অধিকার রয়েছে। কেউ যাতে সংঘাত বা সহিংসতায় না জড়ায় সেক্ষেত্রে আমাদের সচেতন থাকতে হবে। সহিংসতায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিরাপরাধ জনগণ। আমরা নির্বাচন পরবর্তী শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিও বিশেষভাবে প্রত্যাশা করি। নির্বাচনকালীন মানবাধিকার সুরক্ষার লক্ষ্যে পর্যবেক্ষণ ও পরিদর্শনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট ডিও লেটার প্রেরণসহ সকল ধরনের যোগাযোগ চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
প্রতিনিধি দলের এক প্রশ্নের জবাবে মাননীয় চেয়ারম্যান বলেন, সহিংসতামুক্ত নির্বাচনী সংস্কৃতির চর্চা করা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা গতকাল নির্বাচন কমিশনের সাথে মানবাধিকার সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয় বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমরা জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।
আলোচনাকালে সহিংসতামুক্ত নির্বাচন, গণমাধ্যমকর্মীদের দায়িত্বশীল ভূমিকা, নির্বিঘ্নে ও স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ ইত্যাদি বিষয় বিশেষভাবে স্থান পায়। পাশাপাশি কমিশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত কার্যক্রম, লক্ষ্য উদ্দেশ্য সংক্রান্ত বিষয় বিস্তৃত পরিসরে উপস্থাপিত হয়।