আজ সকাল ১১ টায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের জাতীয় ইনকোয়ারি কমিটি নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণ রোধে করণীয় নির্ধারণ বিষয়ক ভার্চুয়াল মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। সভায় ৬৪ জেলার জেলা ও দায়রা জজ, সকল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/ চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটগণসহ মোট ২৪৯ জন অংশগ্রহণ করেন। সভায় প্রধান অতিথির আসন অলঙ্কৃত করেছেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের মাননীয় প্রধান বিচারপতি জনাব সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন নাছিমা বেগম এনডিসি, মাননীয় চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, সার্বক্ষণিক সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন; জনাব মোঃ মইনুল কবির, সচিব, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং জনাব মোঃ গোলাম সারওয়ার, সচিব, আইন ও বিচার বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়; সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব সুদীপ্ত মুখার্জি, আবাসিক প্রতিনিধি, ইউএনডিপি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় প্রধান বিচারপতি নারী ও শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন সংশ্লিষ্ট বিচার দ্রুত ও সঠিকভাবে নিস্পত্তির লক্ষ্যে বিজ্ঞ বিচারকদের মূল্যবান দিক- নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, "ধর্ষণ একটি জঘন্য অপরাধ। ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর সাক্ষ্য বিশ্বাসযোগ্য হলেই ধর্ষককে শাস্তি দেওয়া যায়। এসকল মামলার দ্রুত বিচারের লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। আমি আশা করব, ধর্ষণের মামলা পরিচালনাকালে কারও দ্বারা আদালত প্রভাবিত হবে না। বিচারহীনতা/ বিচারে বিলম্বের অভিযোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। রায় প্রদানে কালক্ষেপণ করা কাম্য নয়। প্রয়োজনে ভুক্তভোগীকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে সাজা না পায় আর অপরাধী যাতে নিস্তার না পায়।
মাননীয় চেয়ারম্যান ধর্ষণের মামলার শাস্তি দ্রুত কার্যকর করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আমরা নুসরাত ধর্ষণ ও হত্যা মামলার দ্রুত রায় দেখেছি যা প্রশংসনীয়। কিন্তু রায় এখনো কার্যকর হয়নি। সকল ধর্ষণ ও নারী নির্যাতন মামলার দ্রুত রায় এবং রায় কার্যকর হলে এধরণের জঘন্য অপরাধ কমে আসবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। পাশাপাশি, বিভিন্ন মহলের মধ্যে ধর্ষক ও ভুক্তভোগীর বিয়ে সম্পর্কিত আদালতের নির্দেশের সমালোচনা উল্লেখ করেন তিনি।
সভায় কমিটির আহবায়ক জেসমিন আরা বেগম স্বাগত বক্তব্যে কমিটির কার্যক্রম এবং বিচারকদের কাছে তার প্রত্যাশার বিষয়গুলো উপস্থাপন করেন। বিজ্ঞ বিচারকগণ নারী ও শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে করণীয় সম্পর্কে তাদের মতামত এবং এসকল মামলার বিচারকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন। উল্লেখ্য, দেশে প্রথমবারের মত একটি ন্যাশনাল ইনকোয়ারি করছে জাতীয় মানিবাধিকার কমিশন।
কমিশনের সম্মানিত সদস্য সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জেসমিন আরা বেগমকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্য-বিশিষ্ট ন্যাশনাল ইনকোয়ারি কমিটি গঠন করেছে কমিশন। কমিটি ইনকোয়ারি শেষে কমিশনের সাথে যৌথভাবে একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন ও সরকারকে সুপারিশ প্রদান করবে।