জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ ০৮ জুন ২০২২ তারিখ, বুধবার সকাল ১১ ঘটিকায় সিরডাপ মিলনায়তনে “বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে শান্তিপূর্ণ প্রত্যাবাসন: প্রতিবন্ধকতা ও করণীয়” শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক আয়োজন করে। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নাছিমা বেগম, এনডিসি। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখবেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার উইং এর মহাপরিচালক জনাব মিয়া মোঃ মাইনুল কবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মেসবাহ কামাল। সভায় আইওএম, ইউএনএইচসিআরসহ জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধি, এনজিও/ সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিগণ নিজ নিজ মতামত উপস্থাপন করেন।
নাছিমা বেগম, এনডিসি বলেন, বাংলাদেশে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের অবস্থানের কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠির জীবন ও জীবিকা নির্বাহ ঝুকিঁর মুখে রয়েছে। তিনি বলেন, এ সংকট নিরসনে ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও এশিয়া প্যাসিফিক ফোরামের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিসরে রোহিঙ্গা সংকটে কমিশন তাদের ভূমিকা বজায় রাখবে। তিনি আরও বলেন,বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের তৃতীয় কোনো দেশে প্রত্যাপর্ন বিষয়ে পক্ষে-বিপক্ষে ভিন্ন মতামত থাকতে পারে। তৃতীয় কোনো দেশে প্রত্যাপর্ন করা হলেও তাদের আত্মমর্যাদা ও জাতিগত পরিচয় সংকটের বিষয়টি মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী দেশ। তাদের সাথে কুটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের মানবিক মর্যাদা ও মানবাধিকারসহ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন করার উদ্যোগ নেয়া সমীচীন। এক্ষেত্রে জাতিসংঘ বিশেষত ইউএনএইচসিআর-এর এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন কালে অধাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনের ভেতরেই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান রয়েছে। কফি আনান কমিশনের সুপারিশে রোহিঙ্গা সংকটের একেবারে মূলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। রোহিঙ্গা সংকটের শুরু করেছে মিয়ানমার, এর সমাধানও মিয়ানমারকেই করতে হবে। মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দরকষাকষি করার প্রয়োজন হবে।
প্যানেল আলোচনায় অধ্যাপক মেসবাহ কামাল বলেন, ঐতিহাসিক পথপরিক্রমায় রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি বাঙ্গালী জনগোষ্ঠির সাথে মিলে যাচ্ছে। তাদের আলাদা করার প্রয়োজন আছে। মিয়ানমারের নাগরিকত্ব আইন পরিবর্তন বা সংশোধনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির নাগরিকত্বের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে।
কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ তাঁর প্যানেল আলোচনায় জানান, রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন সুস্পস্টভাবে জেনোসাইড। এছাড়াও দুর্ভাগ্যজনকভাবে রোহিঙ্গারা চরমপন্থা, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ার ঝুকিঁও রয়েছে। ফলতঃ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এ অবস্থা তুলে ধরে নিরাপদ প্রত্যার্পণ নিশ্চিত করতে হবে।